জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এ বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্র অামেরিকা সবচেয়ে বেশি নাজেহালের শিকার। করোনার এমন সংকটকালে ভিন্ন এক পুলিশকেই দেখছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে চিকিৎসকদের পরই এখনো সম্মুখযুদ্ধে রয়েছে পুলিশ।
এরই প্রেক্ষিতে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন ও হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা, স্বেচ্ছায় ঘরে থাকা সাধারণ মানুষের চাহিদা অনুযায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য, বা ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন থানা পুলিশের সদস্যরা।
এমনকি গত দুই দিনে গার্মেন্টস ফেরত ১১ নারীকর্মী সরকারি ডাক বাংলাতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকলে তাদের বাড়িঘর দূরে থাকাতে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তাসহ তাদের সবার খাবারের ব্যবস্থা করেন ওসি মো. দিদারুল ফেরদৌস। সাধারণ মানুষদের ঘরে থাকার উৎসাহ দিতে ‘অন ডিমান্ড’ এই সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই চৌকস কর্মকর্তা।
সবার ঘরে থাকা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি ঘরে থাকা জনসাধারণদের পানি বেষ্টিত এই দ্বীপে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন কুতুবদিয়া থানা পুলিশ। কাউকে যেন ঘর থেকে বের হতে না হয়, সেজন্য এ উদ্যোগ নেওয়ায় সাধারণ মানুষেরাও থানা পুলিশের উপর সন্তুষ্ট বলে জানা যায়।
যদিও অঘোষিত লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা না মেনে নানা কৌশলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কুতুবদিয়ায় ঢুকে পড়ায় গতকাল ১৮ জনকে আটক করে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়েছেন পুলিশ।
কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দিদারুল ফেরদৌস জানান, কুতুবদিয়ার আমজাখালী, মথুরালীয়া, কৈয়ারবিলসহ আরো কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সাতকানিয়া, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থান থেকে লকডাউন না মেনে অনেক লোক কুতুবদিয়া ডুকে পড়ার চেষ্টা করে কিন্তু থানা পুলিশ সার্বক্ষনিক বিষয়টি নজরে রেখেছেন। করোনা ঝুঁকি থাকায় কুতুবদিয়া থানা পুলিশ এ পর্যন্ত ৭৮ জনকে সরকারি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টানে প্রেরণ করেছে।
শুধু সংক্রমণ ঠেকাতে হাতে লাঠি নয় নয়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে, কখনও কখনও পলায়নকৃত করোনা রোগীকে ধরে আনা, করোনা আক্রান্তের বাসা, ভবন ও এলাকা লকডাউন করা, ত্রাণ বিতরণসহ নানা কাজে জড়িয়েছে পুলিশ।
সেই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও সংক্রমণ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, শনিবার (১৮ এপ্রিল) পর্যন্ত সারাদেশে পুলিশের ৬৫ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
পাঠকের মতামত: